অ্যালোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব ৭টি উপায়

অ্যালোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব?আমরা কতজন জানি যে এলোভেরা ব্যবহার করে আমাদের কতটুকু উপকার হয়। তাই আজকে এই আর্টিকেলে অ্যালোভেরা চুলের জন্য কতটা ভালো সেটা সম্পর্কে জেনে নিয়ে।


আমরা এলোভেরা সম্পর্কে যদি সঠিক উপকারিতা জানতে পারি এবং এটি ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারি আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।আজকে চলুন এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার

অ্যালোভেরা গাছের রস ১৭৫০খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে মানুষ ব্যবহার করে আসছ।এই গাছটি শুষ্ক ও গরম জলবায়ুতে বৃদ্ধি পায় এবং ৪৫০ টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। পোড়া,ব্রণ এবং ক্ষতের মতো ত্বকের সমস্যাগুলোতে এই অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করছে কারণ এলোভেরা প্রসানধী এবং ঔষধি বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে বছরের পর বছর ধরে জনপ্রিয় করে তুলছে। এছাড়াও অ্যালোভেরা খাবার হিসেবে এবং পানীয় হিসেবে রোগীর সুবিধার জন্য কিছু লোক হেপাটাইটিস, ডায়াবেটিস এবং প্রধান প্রদাহজনক অন্তরে রোগীদের জন্য ব্যবহার হয়।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে অ্যালোভেরা জেল এ অনেক সক্রিয় উপাদান এবং বৈশিষ্ট্য পেয়েছে।এই যে চুলে বিভিন্ন উপকারে আসে এবং বর্তমানে বিভিন্ন সংক্রীয় উপাদান ও রাসায়নিক সংমিশ্রণ এই জেল ব্যবহার করে আসছে।

অ্যালোভেরা চুলের জন্য ব্যবহারের গুরুত্ব

অ্যালোভেরা গাছের পাতায় জেল থাকে। এই জেল ব্যবহার করা হয় চুলে ও ত্বকে। এটি জলের মতো তরল, ঘন যার কোন রং বা গন্ধ নেই। অ্যালোভেরা জেলে অবিশ্বাস্য সৌন্দর্যবর্ধক সুবিধা আছে চুলে ও ত্বকের জন্য।ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর জেলে আছে। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছে এই জেলটি চুলের যত্নে অনেক বড় ভূমিকা রাখে কারণ চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, স্ট্যান্ডগুলিকে ঘন করে এবং মাথায় পিএইচ ত্বকের ভারসাম্য রাখে।
নিচে বর্ণনা করা হলো অ্যালোভেরা ব্যবহার কিভাবে আমাদের চুল উপকার করতে পারে।
এটি চুলকে হাইড্রেটিং এবং ময়শ্চারাইজ করতে সাহায্য করেঃচুলকে কিউটিকলকে রক্ষা করতে চুলের হাইড্রেশন একটি অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।চুলকে আর্দ্রতা আটকে রাখতে এই জেলে একটি প্রাকৃতিক হিউমেক্ট্যান্ট রয়েছে।চুলের আর্দ্রতা আকর্ষণ করে এবং ধরে রাখতে এতে পলিস্যাকারাইড রয়েছে।
অ্যালোভেরা চুলকে নরম চকচকে সমৃদ্ধ করে তোলে কারণ এটিতে রয়েছে অ্যামিনো এসিড।
এটি একটি চুলকানি মাথায় ত্বককে প্রশমিত এবং শান্ত করতে সাহায্য করেঃঅ্যালোভেরা বা ঘিতকুমারীতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে। এই দুটি থাকার জন্য চুলকানি রোধ করতে সাহায্য করে। চুল ঝরে পড়া এবং চুলের ফলিকন বন্ধ করতে এই জেলে এনজাইমও রয়েছে যা চুলের জন্য ভালো। 
অ্যালোভেরা প্রতিদিন বা নিয়মমাফিক চুলের জন্য ব্যবহার করলে চলে জ্বালাপোড়া দূর হয়ে যায়।
এটি চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করেঃভিটামিন,খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যালোভেরা তে থাকে। এটি মাথার ত্বকের জন্য পুষ্টিকর।চুল বৃদ্ধিতে এলোভেরার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এটি ব্যবহারে মাতার রক্ত সঞ্চালন বাড়ে তাই চুলের বৃদ্ধি হয়। অ্যালোভেরাতে এক ধরনের টক্রিনথাকে যা মাথা ত্বক পরিষ্কার করে।অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার হয় বিভিন্ন চুলের প্রোডাক্ট।
শুধু কন্ডিশনার হিসেবে চুলের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে ভলিউম ভলিউম বাড়ায় এবং চুল ভাঙ্গা কমে যায়।
এটি খুশকি এবং ফ্লেক্র কমাতে সাহায্য করেঃফ্লেক্র ও খুশকি মাথার হয়ে থাকে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ও শুষ্কতা কারণে। অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ফিলিং কমাতে সাহায্য করে এই অ্যালোভেরা জেলের এবং খুশকি দূর হয় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট এর জন্য সেটি এলোভেরাতে রয়েছে। অ্যালোভেরা মাথার ত্বক থেকে অতিরিক্ত মৃত কোষগুলো সরিয়ে দেয় এনজাইম সমৃদ্ধ থেকে।

অ্যালোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব

আমরা সাধারণত চুলে অনেক ধরনের কেমিক্যাল যুক্ত পণ্য ব্যবহার করে থাকি। যার কারণে চুলের অনেক সমস্যা হয়। কিন্তু এলোভেরা ব্যবহার করে আমরা চুলের যত্ন নিতে পারি। আজকে আমরা এলোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব তা জানবো।
অ্যালোভেরা গাছ থেকে একটি পাতা কেটে নিয়ে এসে সেটি পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে কিছুক্ষণের জন্য পানিতে রেখে দিতে হবে। কারণ এটিতে এক ধরনের হলুদ বিষাক্ত পদার্থ থাকে।
অ্যালোভেরা জেল টি সরাসরি মাথায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
অ্যালোভেরা জেল এর সঙ্গে সামান্য মধু, এক চামচ পেঁয়াজের রস এবং এক চামচ আদার রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যায়। তবে এটি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
শুধু শ্যামপুর সঙ্গেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই অ্যালোভেরা জেল।
এক চামচ টক দই, হাফ চামচ মধু এবং এলোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে ত্রিশ মিনিটের মতো চোরে রাখলে চুল সমৃদ্ধ ও ঝরঝরে হয়।


এছাড়া যারা ব্যস্ত শুধু এলোভেরা জেলটি ভালোভাবে ব্লেন্ড করে পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করলেও চুল সুন্দর হয় এবং ঝরঝরে হয়।

আপনার চুলের জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা

আমরা উপরে এলোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব তা জানলাম, এখন এলোভেরা ব্যবহার করে চুলের উপকার হয় কি করে সেটি নিচে জানব। বিজ্ঞান গবেষণা করে পেয়েছে যে অ্যালোভেরা বাগিতকুমারী চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে। চুলের স্বাস্থ্য গঠন ও লম্বা হওয়ার জন্য অ্যালোভেরা একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
গবেষকরা আরও বলেছে এই জেলটি চুলের স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর চুলের রক্ষা বজায় রাখে।এছাড়া খুশকি দূর করতেও অ্যালোভেরার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। গবেষকরা আরো বলেছে যে এলোভেরা চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে কত নিরাময় করতে এবং হাইড্রেশন বাড়াতে মাথার ত্বকের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আপনার চুলের জন্য এলোভেরা জেল বেছে নেওয়া টিপস

আমরা উপরে জানলাম অ্যালোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব। এলোভেরা চুলের যত্নে একটু বড় ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের উচিত চুলের যত্নে নিয়মিত ব্যবহার করা, তবে সঠিক পণ্যটি বেছে নিয়ে ব্যবহার করা উচিত। নিচে জানব জেলটি কিভাবে চিনতে পারবঃ
লেবেল পরুনঃ উপাদানটি সঠিকভাবে দেখুন ও সেটি আপনার চুলের জন্য সঠিক কিনা সেটা বিবেচনা করুন।
গন্ধ পরীক্ষা করুনঃ অ্যালোভেরাতে কোন গন্ধ থাকে না। তবে কোন পন্যতে যদি গন্ধ পান সেটি এড়িয়ে চলুন। কারণ সেটিতে গন্ধযুক্ত বা কৃত্রিম সুগন্ধি ব্যবহার করা হয়েছে এবং রাসায়নিক উপাদানও রয়েছে।
প্রত্যয়িত জৈব উপাদানগুলি সন্ধান করুনঃ অ্যালোভেরা জেল সাধারণত প্রাকৃতিক ভাবে জন্মায় এবং এই গাছে কোন কীটনাশক দেওয়া হয় না। এটি চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখে।
কোল্ড প্রেসড জেল বেছে নিনঃকোল্ড ট্রেসিং এলোভেরা সনাতন প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতিতে তুলনায় বেশি পুষ্টি এবং সংরক্ষণ করে এনজাইম সক্রিয়।
অ্যালোভেরা ব্যবহার করার আগে এই টিপস অনুসরণ করে বেছে নিতে হবে পণ্যটি।তাছাড়াও, আমরা বাজার থেকে যে পণ্যটি কিনব সেটি পর্যালোচনাগুলি পড়ে নিব।

চুলের যত্নে রুটিনে এলোভেরা জেল যোগ করার টিপস

আমরা উপরে জেনেছি,যে অ্যালোভেরা চুলে কিভাবে ব্যবহার করব এবং সেখানে বলা হয়েছিল যে এলোভেরা চুলের জন্য একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই আমরা যখন জেল টি মাথা ত্বকের জন্য ব্যবহার করব তখন এটি সঙ্গে জিনিস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারি। নিচে এর উপায়গুলো বর্ণনা করা হলোঃ
রাতের স্প্রেঃ
আদা রসের সঙ্গে আধকাপ এলোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে হবে। এই দুটি স্প্রে বোতলে স্থানান্তর করলে ভালো হবে। এই দুইটি উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে মাথার ত্বকে স্প্রে করে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন এবং সারারাত রেখে দিন চুলে।
অ্যালোভেরা তেলঃ
অ্যালোভেরা জেল টি বের করে ব্লেন্ড করে, নারিকেল তেল বা সরিষার তেল সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। দুটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি লোহার কড়াই হালকা আছে গরম করে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি আগুনের তাপ না হয়। ৩০ মিনিটের মত চুলায় রাখার পরে নিচে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিতে হবে। আমরা যেদিন শ্যাম্পু করব তার ঠিক এক থেকে দুই ঘন্টা আগে বা তার আগের দিনের রাত্রে বেলায় এই তেলটি ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
অ্যালো লিভ-ইন কন্ডিশনারঃ
অ্যালোভেরার জেল টি ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল সঙ্গে একটি প্রেবা পাম বোতলে মিশে নিতে হবে। শ্যাম্পু করার পরে এটি ব্যবহার করলে চুল সুন্দর বা ঝলমলে হয়।
ক্যাস্টর অয়েল এবং অ্যালোভেরাঃ
আমাদের অনেকেরই চুল অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যায় তখন ক্যাস্টর অয়েল ও অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে শুষ্ক চুল, রুক্ষ এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। এই মিশ্রণটি চুলের স্বাভাবিকভাবে সুন্দর বাড়ায়। সাপ্তাহিকভাবে এ মিশ্রণটি ব্যবহার করলে চুলের উন্নতি হয়।
অ্যালো ভিনেগার DIY মাস্কঃ
আমরা অনেক সময় ড্রাই হিয়ার মাস্ক ব্যবহার করে থাকে। একটি স্প্রে বোতলে এক কাপ জেলে সাথে তিন টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে ব্যবহার করলে চুল এবং মাথার ত্বক ভালো থাকে।

উপকারের জন্য অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করার উপায়

আমরা উপরে জেনেছিলাম যে এলোভেরা জেল চুলে কিভাবে ব্যবহার করব। সেখানে বলা হয়েছিল এলোভেরা জেল চুলে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমরা যদি এই জেলটি উদ্ভিদ থেকে ব্যবহার করি তবে এ পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে।
  • গাছ থেকে একটি পাতা কেটে নিতে হবে
  • ছুরি বা চামচ দিয়ে জেল সংগ্রহ করতে হবে
  • এই জেলটি বের করে মাথায় সরাসরি ব্যবহার করা যায় এবং কিছু সময় রেখে দিতে পারি।
  • শ্যাম্পু দিয়ে মাথার ত্বক এবং চুল ধুয়ে ফেলুন।

অ্যালোভেরা চুলের ব্যবহারের পরামর্শ

চুলের ধরন বুঝে বিশেষ যত্ন নিতে হয়। তাই ঘনত্ব, কার্ল ডিগ্রী,পোরোসিটি,টেক্রচার এবং ব্যাস সহচুলের বৈশিষ্ট্য গুলি অ্যালোভেরা প্রক্রিয়া করে।


এই জেলে ভিটামিন,খনিজ উদ্ভিদ,ফাটি এসিড এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ রয়েছে তাই চুলের স্বাস্থ্যের জন্য এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

আমরা অ্যালোভেরা সম্পর্কে আজকে অনেক কিছুই জানলাম। এই জেল টি আমাদের চুলের জন্য অনেক বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন বা নিয়ম করে এই অ্যালোভেরা জেলটি ব্যবহার করা। এটি আমাদের চুলকে হাইড্রেশন বাড়াতে,চুলকানি যুক্ত মাথার ত্বকে প্রশমিত করতে, চুলের চুলের বৃদ্ধিতে এবং চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া আমরা উপরে জানলাম অ্যালোভেরা চুলকে কিভাবে উপকার করে এবং অ্যালোভেরা চুলের কিভাবে ব্যবহার করব সেটিও জানলাম। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবে মনে করি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url